বাথান : অভিজিৎ বর্মণ —প্রশান্ত কুমার রায় বইপাতি আলোচনা

বাথান—আলোচনা 
প্রশান্ত কুমার রায়


গল্প চান্দের দরকারে নাই পড়ে তাও বিতি যাওয়া দিনের মানষিলা কি - নাকান আছিলাে কবার গেইলে কতা আর না ফুরায় , শ্যাষত একান উপন্যাস হা পড়ে তারে বাদে ‘ বাথান যােকাতে রাজবংশী জীবন কত উচা - হ্যাটা , সুখ - অসুখ , দুঃখ - আনন্দ , নারীমন , মনুষ্যত্ব অ্যাকটে সাপটি ধরে । আর একিনায় স্বাভাবিক বুলি অভিজিৎ বর্মণের রাজবংশী ভাষার উপন্যাস । বাথান ’ যেনে রাজবংশী সমাজচিত্র । এটি দিন যে সগারে অ্যাকেনাকান না কাটে এটি নারীর মন কিনাকান হৈবে আর ক্যানে বা হৈবে সেকেনাও যেনে জন্মের ছাইনচাত উদরি ভাসি আছে । মহিষের ধুরা এটি বাথান , এলা আর নাই – মানষি হারে যাবার আগত জাগা কাড়ি নীচে গানত , এ্যালাকার জীবনত এই নাকান বিলাসিতা নাই , থাকিলেও মানেবার নয় । একিনা কতা জানিয়াও অভিজিৎ বর্মণ ক্যানে নেখির গেইলেক সেকিনায় কথা হবারে পারে । উপন্যাসত মূল চরিত্র মালতি , যায় নিন্দের ভিতিরা বান্দা গন্ডি ভাঙির চাঞও বায়রার জীবনত মুক্তির সােয়াদ নিবারে পারে নাই । যেনে পত্তি মানষি ঘাটা হাটিবার কথা ইচ্চামতন । নােয় একিনায় শ্যাষকতা । নারীর আটকি থাকা জীবন ক্যানে অ্যালার্ড অ্যাকুনাত থুকরি জোটা সেইল্লা কতা করে যা গল্প ফান্দাচে অভিজিৎ । সত্তুর পাতাত সতেরাে অধ্যায় জুড়ি অ্যাকান দোতারার স্যাওতি থােজ্ঞা কাহিনি । যে দোরােখান অ্যালাঙ পড়ি বাজেবার গেইলে বাথানের সুরে খালি বাজিবে — জেবন য্যালা জাগিবে সেলায় বাজিবে তারের দোতরা । তিস্তা নদী এটে গােটায় রাজবংশী সমাজের আঙিনা তারে ভিতিরা মহেন দেউনিয়া । নামটাত দেউনিয়া থাকিলেও সয়সম্পত্তি আর নাই , এমুনে রাজবংশীলার পরিনতি এই আবস্থাত পড়ি উনারে বেটি হােকোদ্দোম মরি গেইচে । মালতি যেনে একবেলাকার ফুল – ফুটিলে সৌরভময় কিন্তু বেলা য্যালা দুপুরা স্যালা স্যাওতি যায় – এই নাকান ছবি । আগসারি রাজবংশী ঘরত অ্যালাঙ পচচিম দুবাের ঝাঁপা , আগেবার ঘাটা অস্পষ্ট - আকড়ি ধরির কোনয়টা নাই । থাকে আর ক্যাও করি – বাথান খালি সারি সারি যায় যেনে চলমান জনতা , কোনয়টে ছাপছুট রাখি না যায় । মইশালের গালার গান ছুঞা থাকে থির জনতার মনের অস্থির অবস্থাত । মৈশালতাে কইনা মানষি হবারে না পারে , তামানলার যেনে ঘর সংসার নাই যেটি ধুরা সেটি ঘর কয়দিনিয়া , যেনাকান যাযাবর । তার ভিতরা জেবন থাকে যৌবন থাকে কিন্তুক স্থিরতা থাকে না সভ্যতার গতির বিপরীত ঘাটা বুলি বাথান একনা প্রাকইতিহাস জেবন । অভিজিৎ বর্মন বড় কম সমায় পাইচে এই নাকান গল্প শােনেবার , হয়তাে নিজের জেবনের কাউন্ট - ডাউনের শব্দে ভীতি ছিলেক বুলি । তা , যেকাতা কবার ছিল বুঝি নেওয়া যায় – আমারলার জেবনও অ্যাকে নাকান ভাসি যাবার , হারে যাবার , হুতাশ খাবার , গানের সুরত , গানের কথাত রঞা যায় । বাথান দারিদ্র জীবন আর সে জেবন বড় কষ্টের , সেটি ভােগ নাই সভ্যতার ; সভ্যতা দারিদ্রত আর সােন্দেবার চাঞে নাই , পারেও নাই । জেবনের কত দরকালি আয়ােজন যেনে প্রকৃতির কৃপণতায় বুড়া - গাবুর - চেংরা একে সমায়ের অ্যাকে মানষির উকটান । রাজবংশী নারীজেবন অল্পয় , সেটি প্রাণ কোটে ? নারীকাটা ছুনছুনির খুবে বগলদারী । সমাজ , অর্থনীতি য্যালা যেনাকানে থাকে , বিবেকের আয়না যতকোনা ভাঙা ততকোনায় অভিজিৎ তাকে তলথিবার চেষ্টা করিচে । উপন্যাসখনত ভাইল্লা ভাওয়াইয়া গান , কতুলা ছিল্কা যেনে রাজবংশী ছাড়া কাঙোরে জেবনত নাই – এই নাকান করি ক্যানেবা অভিজিৎ গল্প হাটের চাঞ ? সমাজ যেটা চায় অভিজিৎ তাকে ফম করি দেয় — গােপন মনের হদিশ পৃথিবীর যতুলা প্রেমের কাহিনিত রূপকতা হঞা আছে তার বায়রা অভিজিৎ যায় নাই । তিস্তা নদীর পাড়ে রাজহংসা আর – উনার উড়িয়ারে যাওয়ার গতিক দুৰ্ভগা রাজবংশী সমাজ সেটিকার খুতরাখুতরি বিবেক ছিটকি পড়িচে ‘ বাথান’উপন্যাসত । আটশ সগারেটে অ্যাকটায় উপন্যাসখান পড়িবেন । রাজবংশী যেনাকানে সৌগ হারেবার ধৈচ্চে তারে অ্যাকনা ছবি , ভাবাে কদ্দিনে ফিরে পাবার পারে মানষির অধিকার ।

বাথান উপন্যাসের ভাষাশৈলী - উফাং উফাং মনে পাছ পাখে ফিরিয়া দেখিল হেলা গছটা আন্ধারতে আমাছামা হয়া গেইসে , সােতাটা ঝুনি মৈলাম পড়ি গেইসে , জলের হুপাখের ঘাটটা , উড়ুং ধাদিনা , মাটিয়া আস্তা , আন্ধারের আড়ালােৎ মিশি যায় । খালি জাগিয়া নয় ময়হাওলি ছনছন গাবুর মালতির জলে ট্যাপট্যাপ দুই চখু-- কাথা , --কালাদা ক্যানে এইমন ময়হা তােমরা নাগালেন । যাবেন কে যদি , তে আসিলেন ক্যানে ? পতি বচ্ছর এং করিয়ায় তাে কত বাথান আসিবে কত বাথান উঠিবে , কত কালা ঘুরিয়া বেড়াবে তিস্তা নদীর চরে চরে ; তাও ভিজ্জি কুজ্জি মালতি ঐ যে হুকুর হুকুর করি বাথানের ময়হা পাশুরির তানে দৌড় ছুটিবে কোণ্ঠে তার শ্যাষ ? বাথানের মিছা ময়হাতে আহােঢ় পায়া ছিড়ি ছুটি মানষি ঝুনি ফমপাসুরিবার তানে এং করিয়ায় মরণ জিয়ন দৌড়ায় কালার চখুৎ ভাসি উঠির ধরিল ঐ পৈসাঞ্জ । মন করিলে তাে মালতিক নগরি করিবার পারিলেক হয় , ন হয়তে ঘরজেয়া থাকিয়া সুরে সুরে বন্দিল হয় জীবন , তাহ ঝুনি কালার বুঝ নদীটা পার হইলেই ফম পাশুরা যায় তামান ময়হা , তামান সুর , ক্ষীরােল ডাঙের বাথান । ছলবল চখুর সুরােতে বত্তিয়া নয় নেখাইঞার আত্মা । কালা তায় আংদে বেড়ায় শূন পাথারের ডেলি । গানের ভাক্কায় ভাক্কায় যতয় ভাঙ্গেছে মালতির গালা ততয় ঝুনি তিস্তার ধাদিনা ভুসুরি ভুসুরি পড়েছে বুক ভাঙ্গিবার মতন । সােতাল গান তিস্তার মতনে উভিনিগাচে অভাগেনির চখুর জল যুগের পর যুগ উত্তর থাকি দখিনে নিদারুণ নিরাধার দরিয়ার ডাঙে প্রাণ • • • •


বাথান
অভিজিৎ বর্মণ
প্রথম প্রকাশ: ২০০৯ খ্রিস্টাব্দ
প্রকাশক: রাজবংশী একাদেমি
দাম: ৮০ টাকা

Post a Comment

Previous Post Next Post