গাড়িয়াল বন্ধু" পর্ব - ১

"গাড়িয়াল বন্ধু"  পর্ব -১
            ➤ মিজানুর রহমান 
মেহের আলী, বয়স ৭৫/৮০ লোকটা বাড়িত কাজ করে। চেহারা কোনা দেখিলে সগারে মনোত ময়া নাগে। রৈদে ঝরিতে খাটিয়া জং ধরা লোহার ঢক হৈচে দেহার রং। মাথার চুল গুলা না হয় দেশি না হয় বিদেশি। গোড় খান সাদা আগাল খান নালছাটা হৈছে। তেল নাদি নাদি এ্যামোন হইচে মনে হয় কাউয়ার ভাসা। কয় হাত দুরোত খাড়া হইলে চোখ দুখনা দেখা যায় না।  খালোত সোন্দাইচে খালি সাদা রঙ্গের ভুরু দুখনা দেখা যায় উপরোত। তাও  এই দেহা ধরি একদিন কাজ না করলে ওমার পেটোত ভাত ঢোকেনা । বাড়িত আছে ওমার হাড্ডি-সার বুড়ি মাইয়া, কোন মতে চাইট্টা ভাত আন্দি দেয়। চৈলবারে নাপায় অতোয় কোনো মতনে কাজ করে। এ্যনতোন অবস্থার জন্য কাকো দোষ দেয় না মেহের আলী। বিছনাত দেহা গতেয়া খালি কয় সউক নিয়তি। ব্যাটার ঘরোক কাকো দোষে না। সৌগে আছিল মেহের আলীর; সারে তিন বিঘা মাটি, গরুর গাড়ি, গরুর হাল, বাশবাড়ি, ডিগি সউগ। এ্যালাও যেটা আছে দেখা যায় না, তবে হিসাব করলে যেটা আছিল তার থাকিও বেশি। মেহের আলীর তিন ব্যাটা, কি দেয় নাই ওমাক গুলাক।  গায়ের রক্ত গায়ের ঘাম ছাড়াও জাগা জমি বাড়ি সৌগে দিছে। লেখা পড়াও করাইছে। তিন ব্যাটাকে লেখাপড়া করার চেষ্টার কোনো বাকি থোয় নাই। এ্যালা এক ব্যাটা চাকরি করে বাকি দুই বেটা চাকরি না পা-য়া হাল-কৃষি । সাড়ে তিন বিঘা জমি হালুয়া চাষ করে তিন ব্যাটাকে মানুষ করা ম্যালা কষ্ট। তাও ব্যাটার ঘরোক কষ্টটা বুঝির দেয় নাই। কষ্ট হইলেও নিজে কাজ করচে ব্যাটার ঘরোক কাজও করির দেয় নাই। আর এ্যালা যে ব্যাটা চাকরি করে অয় শহরোত বাড়ী করি থাকে বুড়ার কোন খোজ নেয় না। বাকি দুই ব্যাটা আলদা বাড়ীত থাকে বুড়াক দ্যাকলে দুর দিয়া হাটে।
    এই বুড়ার ব্যাটা মেহের আলী হইল গল্পোর মুল নায়োক জুয়ান  বয়সের চেংড়া "গাড়িয়াল বন্ধু" নাও মেহের আলী বাড়ী লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা থানার পারুলীয়া গ্রামোত। 
(আজকের অংশটি গাড়িয়াল বন্ধুর বর্তমান অবস্থা নিয়ে গল্পের পরিচিতি পর্ব।)

Post a Comment

Previous Post Next Post