অভিজিৎ বর্মণের নেখা রাজবংশী বড় গল্প ‘কান্দুরি’


কান্দুরি
অভিজিৎ বর্মণ।

কি গে কান্দুরি বিহান ৯টা বাজিতে নাই বাজিতে কি তোক ইস্কুল যাবা হোবে? ঘুর ঘুর।
হাসি হাঁসের নাখান গালাটা দিঘোল করি এক হাতেৎ পাটা নেলা পাশুনটা ধরি চখু কন্ডরে
দেখিবা ধরিল কান্দুরির মাও গুনেশ্বরী। বগলৎ অর বাপ তখন পাটায় নেলাছে। কান্দুরি উত্তর
দিল ‘আসিয়া দ্যাখেকদিন কয়টা বাজিসে।
 কয়টা বাজিসে? অয় চেংরী মোক কি একটা সাদা ভেলটেঙি পাইসি? একটা ছাত্রও
ইস্কুলমুঞা যাবা ধরে নাই। দিনে দিনে এমন যে উসুলি হবা ধরিলু ঝনে ডিমাপাড়ি হাঁস।
বাড়ির দেল্লা গুট গুট কামগিলা কায় করিবে? ভাল শাক আন্দিলু ?
 কান্দুরি চুপ করি নইল। এংনা পরে কহিল ‘খকরা ভাত খানু। অ নিজে বত্তিলে বাপের
নাম। বাড়িৎ তমরা ওষা নাগি মর আর খাইদাই হনে মাহেরানির মাও ভ্যানিটি ব্যাগ ধরি
বিড়ি পল্লে। চ্যাংরাচেংরীয় কি ডিংগাও ডিংগাও বেড়ানি। আগি যায়া কহিল ভাত না আন্দিলে।
তোক আইজকা বাড়ি ছাড়া করিম।
কান্দুরি - অভিজিৎ বর্মণ।  ফটোকঃ সুজন রায়।
 কান্দুরি বুঝিল আসল কাথাটা না কহিলে মাও এর ভেগভেকি আর কমিবা নয়। মাও যে।
মশান নিহনে আছে হাতের পশুন দিয়া কুন সমাই ঝাটা দিবে কায় জানে। চিকিরিয়া কহিল
কেরানীটা যাবা কহিসে আইজকা’
যাবা তো কহিবেই। যায় যেমন তায় তেমন তায় না হলে হয় কেমন। বুড়ালি বশে
মেহেন্দির অস, মেহেন্দি করে টস্টস। যেমন ছাগল তমার কেরানী তেমনএ এই ধাগিরিটা। ঐ
বুড়াঠঠিনা অত কিসের ঘনপাকি? টাইপেন্ডের টাকা আনিছি না বুড়ার গাল চাটিয়া পাইসা
আনিছি ভগবানে জানে। হাইরে বাপ এমন আলসিয়ানি কামউসুলি চেংরী মোর প্যাট
থানিলেক। আগৎ জানিলে প্যাটতে মারি থুনু হয়। আজিও বোলে টাকা দেয় কালিও বোলে।
টাকা দেয় টাকার আলদিয়া কামকাজ বাদ দিয়া পত্তিনে তোর বাজার বেড়ানি রে মাগি
কান্দুরি কুনো কাথা কহিল না। কেরানী পাইসা না দিলে উয়ায় কি করির পায়। উমারে।
হাতৎ দনকুলা। গুণেশ্বরীর বগলতে পাটা নেলাবার ধরিসল কান্দুরির বাপ সুখধন। অয় কয়া।
উঠিল – দেক, দেক, যাবা দে। হাজার হউক পাইসা বুলিয়া কাথা।
অ তোমার তো ঐটায় তাল। বোঙ্গায় বোঙ্গায় টাকা তামাক আনিয়া ঠিসাউক আর তমরা বেটির কামাইর টাকা পকপক্ করি গিল, তমার শরম নাই ?
 আরে পাগিলি হাচকায় পাইসা কামাই কায় ছাড়ে কহেক দিন?
পাইসাটারতি তমার নজর। আর এই কাম ভাত আন্দা, থালি খুড়ি মাঞ্জা কাম কায়
করিবে? পাটা নেলা শ্যাষ করিহনে ঝালি দুই হাত গড়িয়া কি মুই ভাত চড়াইম? হিপাখে
তমরা তো ফপে উঠেছেন। দেখেকচি মোর গালপাশিখান দাতের বেদেনাতে ফুলি ডম হই।
গেল। চপরাতি কুহুরি আছ। মাও বাপের কি হইসে অর কি ওইটা হুস জ্ঞান আছে?
ফপেয়া কি মুই উঠেছু। তুইএ গোমা সাপের নাখান ফোঁস ফোঁস করিছি। নিজের ছাওয়াটাক
ধাগিরি মাগী কহি গাইল পাড়িছি। কয়দিন পরে বেহা দিবা হোবে। নিজের কাথা উল্লি দিলে
বেহা করিবে কায় ভাবেক চি। ঐবাদে কহে ‘বেটি ছাওয়াক বুজ আগাল ছুচ।
ইমার কাথা শুনিতে শুনিতে কান্দুরি কান ঘ্যাচকেটা পড়ি গেইসে। পতিদ্দিনে এইখান
ক্যাসেট বাজিবেই। বাপের গাইল মাওয়ের গাইল। কোড়ার দনপাখে গোল! অয় এক পাও
দুই পাও করি ইস্কুলের পিখে হাটন জুড়ি দিলে। ইয়ার মইধ্যে অর মাও ঘুগুরির নাখান চেচারি
দি কহিলে, আইজকা টাকা না আনিবা পারিলে তোর আলকাটু নেচার বন্ধ করিয়া ছাড়িম।।
ঘরৎ যদি তালা বন্দ করি থুবা না পারু তো মোর নামে এক ভুটি কুকুর ছাড়ি দিস।।
অখিল কেরানী স্টাইপেন্ডের টাকা দিবে বুলিয়া ঢেইলদিন হাতে ঘূরিবা ধরিসে। একবার
কহেচে কাইলকা দিম, একবার কহেচে পাইসা দিবার নটিশ কেলাস পচে দিম। এংকরিয়া
দোমাসি দোমাসি থাকিহনে চানটা গাজাইলমড়িলআরো গাজাবে। একদিন কান্দুরি আবদার
করি কহিসে মোক টাকা দিবায় হোবে। বাড়িৎ দিনে অতি বাপমার ঠিনা চদন খাচু। অখিল
কেরানী ফাটাম করি আগি যায়া কহিসল মুই কি একটা হাত ধোয়া পাইলা। যখন ইচ্ছা তখন
ঘুকুলিবেন। কান্দুরি কিছু কহে নাই। কাহ কাহ কইছে ‘টাকা আইচ্ছে কিন্তুক ইমরীরা ব্যাঙ্ক
থিইহনে সুদ খাচে। কান্দুরি কবার চাইসিলো কিন্তুক আরো ভাবিসে উড়া কথাৎ ভড়া ভাসা
যায় না। টাকাটা নি হনে কি যে করিবে ঐটায় ফের চিন্তা। ইংরাজী মানে বইখান ৩ মাস হই
গেল কিনিবা পারে নাই। ব্যকরণ বই কেলাসৎ না দ্যাখেবা পারিলে চারু মাস্টার কান ধরিয়া
খাড়া করি থুবে। হেডমাস্টার কহি দিসে ইস্কুলৎ সন্দেবা গেলে স্কুল ড্রেস নাগিবেই। এইলা
চিন্তা করিলে মনটা ভাঙি যাছে। এত কষ্ট করিহনে কাহ পড়াশুনা করে? এইসনে অর দিদির
বাড়ি থাকি দিসিল একখান ধরধেরিয়া ভুড়া সাইকেল ঐখানও অর বাপ জুয়ার বোড
বন্দক থলে। নাঃ বই পড়া বাদ দিবা হোবে। আরও ফির চিন্তা করেছে এই তো হাতে গনা।
দইটা বছর। ধেদেরি ছেচেরি কাটেবা পারিলেই উয়ায় হোবে এই গেরামের প্রথম মাধ্যমিক
পাশ করানিয়া চেংরী। ভাবিয়া বুকখান দুই ইঞ্চি ফুলি উঠেছে। মাস্টার কহিসে আর কাহ পাশ
না করিলেও কান্দুরি পাশ করিবে। কাথালা ভাবিতে ভাবিতে ইস্কুল আসিয়ায় পড়িল। আড়াই
মাইল হাটানিয়া পথ একঘড়িতে ফুরাই গেল। ইস্কুল আসিয়া দ্যাখেচে সোগায় আসিচে কেরানী নাই। কান্দুরি মনে মনে ভাবিল আইজকাও বোধায় হবা নয়। হের যাউক হোর যাউক বেলাটা
বোধায় সেদিন পচ্ছিম পাখে উঠিছিলো। টাকার ক্যাশবাক্স ধরিয়া কেরানী দুফুরাতালোৎ
পাইসা বিলিবা ধরিল। তামান ছাত্রছাত্রী চত্তিদিনৎ টাকফাটা চাংচাং ওদোৎ যেনং গরুগিলা।
জলের নেতান্না নাগি ধাইয়া ডাঙাৎ বাচ্চে নয় তেমন করি টাকার বাচ্চে তান্না নাগি নইল।।
কান্দুরির যখন ডাক পড়িল তখন বেলা ৩টা। কেরানীর বয়শ হেটে গেইসে। চখ সুজে না।
অনেক কষ্টে হাতের কয়টা নেঙল কাঁপিতে কাঁপিতে কান্দুরিক তিনখান শতকিয়া নোট বুঝাই।
দিলে। কান্দুরির মন খুশিতে ধরে না। অয় হাসি মুখে বাড়ির ঘাটা ধরিল।।
 বাড়ি আসিতে আসিতে আধিয়া ঘাটাৎ যাক দেখিল তাক দেখিয়া কান্দুরির জিউ চাঙ্গ
রিৎ চড়িল। হাসিতে হাসিতে কালা দাত নিকিলিয়া সুখধন আসিয়া কহেচে ‘পাইসা পালু
বেটি ?' কান্দুরি মনে মনে ভাবি পাইল নাই কি কহিবে। সুখধন কহিল, “হুমেশ্বরের বেটা
কহিলে তমাক বোলে তিনশ করি টাকা দ্যাছে। তে কত পাল বেটি ?
কান্দুরি মাথা হ্যাট করিয়া কহিল অতয়। সুখধন ব্যস্ত হই কহিলে ‘তে দে ঘিস করি মা।
মুই হাঁট যাইম।' কান্দুরি বুঝিবা পারিল অর বাপ কিভানি একটা বুদ্ধি পাকাছে। না হইলে
সতলা সতলি করিবার মানষি অয় নাহয়। কান্দুরি কহি উঠিল কি করিবু টাকা?’ দে ক্যানে।
আগেৎ। তোক কি কি নাগে কহেক। বাকি টাকা তোরঠিনা মুই ধার হিসাবে নেছ বেটি ধার।
 ধার। শোদ করিয়ায় দিমকে না বেটি। ক্যানে হুসসন তো মোর টাকা দিয়া মুরগি কিনি খালু।
 দিম্ দিম্ করি এলাও দিছি।
  সুখধন হাসি ফেলাইল। হাসিয়া হাসিয়া কহিল এই পাটা বেচেয়ায় দিম। কান্দুরি
 কহিল ইস, ধান থাকিয়া পাটা, পাটা থাকিয়া ঈরি, তোর কোড়ালে ফুরায় না। নিলে তোত।
 আর দিবার নাম গন্ধ নাই। এংকরিয়া বাপবেটির কাহিজ্জাল ভালে নাগি গেল। দুই একঝন
 হাটুয়াও গোটে হবা ধরিল। মাটিয়া আস্তাৎ ট্রাফিক জাম হই গেল। সবায় কহিবা ধরিল হইসে
 বোরে হইসে। সাইড দ্যাও। কাহ কাহ কহিবা ধরিল আজিকার দিনটা টাকাটা দিয়া দ্যাখেক
 কি করেছে। না হলে তো তোর বাপক হামেরায় ধরিম। কান্দুরি হাটুয়া আস্তাৎ কাহিস্টাল
 করিবা চাহিল না। একঝন কহিল দেখল নেখাপড়া শিখিয়া চেংরাচেংরীর হুসের নাড়ী টনটন।।
 পাইসার বেলায় নিজের বাপকও চিনে না। বাপের হোটেলাৎ খাচে বাপকে ফরফরি দেখাচে।
 আইজ কাইলকার চ্যাংরা চেংরী এত যে পড়াশুনা করেছে। করিয়া কি করিবে কহেক চি।।
 বড়জোড় এংনা প্রেমপত্র নেখিবা শিখিবে। খায়া দায়া পংখি বনের ভিতি আংখি। বাপের।
 হোটোলৎ গাসে গাসে খাইহনে ডানা গজালে ভুরুৎ। কত্ত দেখিনু । এই ত্যাল পাড়ি গিলার
 ঢং মোর জানা আছে। কান্দুরি কাথাগিলা শুনিবা পাইসল। শুনিয়া মন খারাপ হই গেল।।
 সুটমট করিয়া মুঠি করা টাকাগিলা অর বাপ দি দিলে। গধিল গালাৎ বাপক কহিল বা।
 মোর তানে বই আনিস, জামা আনিস। দোকানী গোপালদার ঠিনা যাইস মোর বাকি বইগিলা অয় জানে। দি দিবে।
ঠিক ঠিক আছে বেটি। তিনখান নোট খুপ দিয়া গনেয়া সুখধন হাটমুঞা হন হন করি
হাটন জুড়িল।।
কান্দুরি বাড়ি সোন্দাইতে অর মাও চিকিরি উঠি কহিল এতক্ষণে আসিলু? বুকের
অঘুন বুকতে থুইয়া কান্দুরি কনেক হাসিব চাহিলা। এই কিনা দেখিয়া উয়ার মাও আরো
জুলি উঠিল। গাও কলে কহিল ‘চিকিৎ চাকাৎ হাসি ভালে শিকিসি ভালে খুউব ভালে।
এইখান বেটিএ মোক নাগে। আর কনেক দেরি করি আসিলু হয়।
কান্দুরি সাহস করি কহিল ‘আইজকা পাইসু।' কান্দুরির মাও মুখখান কনে টেরিয়া
করি কহিল এতদিনে ভগবান মুখ তুলিয়া দেখিসে তাহালে। বগল ভিড়িতুনে কহিল
পাইসা কুন্না?’
কান্দুরি চুপ করি নইল। এনা পরে কহিল ‘নিয়া নিসে।
 কায়?
  বা।
শুনেশ্বরীর মনের ওঘুন পোরাৎ করি জ্বলি উঠিল।
ঝং ঝং করি কহিল – “ঐ ডেকুয়া মড়াটাক তুই পাইসা দিসি? চামড়ার চথু দিয়া অক
দেখা না পাইস। পত্তি হাটে নিশা খাইনে চিতোর ভালট্যাং হুই হাটোৎ পড়ি থাকে তোক কি
আরো নয়া করি কহিবা হোবে? এমনি নাচুনি বুড়ি তার উপড়ে ঢাকের বাজুনি। আইজকা যদি
নিশা খাই আইসে তোর গিটগিটি চালি দিম।'
কান্দুরি আন্দঘর সোন্দাইল। উয়ার মাও ভলিউমটা এংনা কমে দিয়া আপনমনে কলের
পার সান্টিতে সান্টিতে ক্যাটক্যাটেবা ধরিল। অন্দরঘর সন্দে দেখিল অচানক কান্ড। ডেকচিৎ
ঝরাঝরা অন্থ চাইরটা ভাত। শাকপিরি কুনয় নাই। এনা মোটা গলায় কহিল ‘মা মোর
ভাত কুনা?”
– ক্যানে কানি হইপি? চখুলাৎ আন্দেলা পড়সে? শেকিয়াৎ ভাতের গাওলাটা আছে
দেখা পাছি না?
 দেখা তো পাইস তে অফ চাইরটা ভাত?
 কারি আরো কিছু কহিবা চাহিল। গুণেশ্বরী কাউ কাউ সুরে কহিবা ধরিল ক্যানে
 ডাল ভাত পিলা পছন্দ না হচে? কতনা ভাত মাগে তোফ? হাসের মতন চাকার গাকার করি
 খাইলে কি চলিবে? আমরা বৌ বনুষ মানষি। হামার একবেলা খাইলে কি না খাইলে কি?
  কান্দরির প্যাটৎ ভরখর তোক নাগিসন্স। এচারহটা ভাত খাইনে ভোক নবি নয়।
 কুনো উপায় না দেখি টিনের মুড়ি হচিতেবা ধরল। অর মাও কান সুলকি। বেটি কি করিব।
 ধরিসে আইডিয়া করি কিবা ধরিল।

 ‘সবুর সবুর রে বেটি। ভাত ছাডিয়া মুড়ির টিনৎ হাত ডুকাইসি? ঐ চাইরটা তোর
 ভাই খাবে। এত বড় প্যাট ধরি ক্যানে যে ভগমান উপজাইসে কায় জানে। এই কথা শুনিয়া
 কারির আর মন চাহিল না মুড়ি খাবার। অয় আধা পেটিয় খায় নইল।
 বৈশাখ মাসিয়া দিন গিলার খেরি দশরা মতন। নয়া বাইষ্যার ম্যাঘের মতন ডিহিরন।
 কিন্তুক একছাক থ্যাপথেপানি জল দিয়ায় গাবি যায়। দিনমান যে পিঠিফাটা ওদ, ঐকিনা
 বষ্যনেএ ঝনি মাওয়ের এক দার দুধ। নিজের জাহুরা ঠিক থুবার তানে বোধায় দ্যাওয়াটা ড্যাক
 ছাড়ি দিলে। এমনিতে মচমচা আন্ধার তার উপরে সুর সুরানি বাতাস নিন্দোবালি ঝাপাইসিলো।
 দুই ভাইবইনির চখুমুখতে। ঘাটার ভিতি বারেবারে দেখিহনে হাপসি যায়া কান্দুরি গোছার
 আগৎ বই নিকিলি টুপিবা ধরিসল। ভাই বঙ্কিম এংনা জাগনায় আছে। কলম দিয়া দিদিক
 মাঝে মাঝে ঘুতিয়া কহেছে মাক কহি দিম তুই টুপিছি।
 কান্দুরি কহিসল – চুপ করি থাক তুইও তো টুপিছি। বঙ্কিম ভাবিল মা কহি দিলে তো
 আগিলা ক্যাসেট চালু করিবে। নিজের বইপড়াও আর ভ্যাকভেকানির অন্তে হবা নয়। হ্যান
 সময় আস্তাৎ চেচা বকরা শুনিয়া বঙ্কিম কহিল –
 – দি বাবা বোধায় আসিবা ধরিসে।
 কান্দুরির নিন ছুটি গেল। এংনা কান পাতিয়া শুনিয়াকহিল
 – বাবা বোধায় না হয়।।
 গুনেশ্বরী আন্দঘর থাকি চিকিরি কহিলে – মড়াটা আইজকাও নিশা খাই আইসেচে।
 এই চেংরী খান এত করি যে কহা যাছে বান্দোরের হাতে মুক্তার মালা দিন্না। তে
 কিসের কি অয় সাজিবা গেইসে বাপ দুলালী। মুইও ঢং ঢং দেখি আছ। মোক বোধায় এইবার
 বোল্লা কালী সাজিবা হোবে। কহিহনে বোড়োৎ করি একটা জল গরম কান্তাইৎ ঢালি দিলে।
 কান্দুরির মনটা উসখুস করিবা ধরিল বাপ অর জামা, বই আনিসে না নাই। না তামান টাকায়।
 নিশা খাই শ্যাষ করি দিসে। সখধন হাবুস গলায় উল্টাং ভাণ্টাং সুরে গান ছাড়িসে। হাটিবা।
 ধরিসে টোংগোর বোঙোর করি। আর নগদ দুইটা কাইচের গোন্ধালি ত্যালের বোতোল ঝনি
 মিউজিক দিব ধরিসে ধংওঁৎ ধংওৎ করি। সুখধন ভালে লোড হইসে। গান ধরিসে সবাই।
 আমায় বাউল বলে বাউল হতে পারলাম কই। বগলের নগরি একঝন অহ টাল। ঢুলিতে।
 ঢুলিতে পুছ করিলে –
  সবায় কি বাউল হবা পারে সুখধন দা।
– পারে।
– কেংকরি?
– এই ধরেক ঘাড়ৎ একটা ঝোলা নিলে তো বাউল হই গেলু।
 ক্যানে মাইয়া ছোওয়া?

আর হামরা খাইলেই দোষ না হয়?
একেবারে মনের কথা কহিলু ভাই। ঐবাদে তো তোর সাথে শঙ্গরা হালা পাতিবা চাহাচ।।
তাহালে আগিলা দাদা ভাইয়া সমনটার কি হোবে?।
ঐটা তলৎ পড়িবে। মান্সি এখন বৌদি, শালি, কাকার বেটি, মোসির বেটিক বেহা করেছে।
আর আগিলা সমন পুছে কায়।
ঐটাও তো একটা কাথা।
সুখধন বোল্টর কাথা থামে দিল। কহিল নইস রে বোেন্টু একটা বিড়ি ধরাই।
বোন্টু হাচতা হাচতি করি উত্তর দিলে সালাই তে নাই! নাইতে নাই। হাটেক ঐ যে
একটা দোকানাৎ নেম্পবাতি দেখা যাছে ঐন্নায় বিড়ি ধরাই। বাড়ি যাইতে যাইতে দুই তিনটা
বিড়ি নাগিবেই।
 কান্দুরির মাও খেলান বাড়িৎ নেস্পতি ধরিয়া কাউ কাউ মুখখান ধরিয়ায় আছিলো।
আতিরখন ঠিক মতন চিনিবা না পারিয়া হুনঠাউরি সুখধন কবার ধরিল দ্যাও তো বাহে
কনেক ওঘুন বিড়িটা ধরাই। কথাটা শুনিয়া গরম ত্যালৎ বাইগন ছাড়ি দিলে যেমন পোরোৎ
করিয়া উঠে ঐনাখান করি জুলি উঠিল গুনেশ্বরী। ঐলা বাজারিয়া জিনিস খাইনে হুস হারাই
ফেলাইসেন। মাওমোসি বইনিমাইয়া কিছুই আর চিনিবা পারিছি না, না হয়~~ ?
ঝং ঝাঙানি কথা শুনিয়া সুখধনের হুস ফিরিল। মুখদি বিড়ি আসিলঅ তুইএ হে হে
হে। বোল্টরওদি দেখিয়া কহিল, ‘হর ডে বোল্ট বাড়ি পহুচি গেইসি। কান্দুরির মাওয়ের চখ
দিয়া ঝুনি ওঘুন বিড়িবা ধরিল। কটকটু করি মাতোয়ালটাক দেখিবা ধরিল। সুখধন হাসিবা
চাহিল। লোড অবস্থায় থাকিলে হাসির ঢক দশরা নাখান। কহিল ‘হের নেকছি খরচা
পাতিগিলা। কহি দুইটা ত্যালের বোলে একটা ব্যাগ আগেয়া দিল। কান্দুরি আসিয়া ধকফক
করি পুছ করিল • বা মোর খরচগিলা আনিসি?
~ আনিসু বেটি আনিসু।
~ কুন্না?
—হেরটা। কহি একটা হাঁসা হাঁস আগাই দিলে। কুন্না তোর জামা, বই কুম্না কি হাসটাক
দেখিয়া কান্দুরি ছিড়কি চখু দিয়া জল বিড়িবা ধরিল। বেটির কান্দন দেখিয়া হাঁসটা ঝিটকাই।
নিয়া গুনেশ্বরী আগি যায় কহি উঠিল —
  ‘হ রে ডেকুয়ামড়া তোক আনিবা কহিনু খই তুই আনিলু চুড়া। থাকিস তোক হাঁস
খিলাছ। তোক আইজকা শ্যাষ খানটা খিলিবায় হোবে।' কহি হাঁসটা পাকতাৱ দিলে পাটা
বাড়ি। হাঁসটা উড়িবা তানে দুই একবার ডানা ঝাপটা ঝাপটি করিয়া টাক টাক করিয়া উঠিল।

সুখধন তাও হয়া কহিল, 'এ ধাগিরী হাঁসটা কি মই একেলায় খাইম, ছাওয়া পোয়ালা খাবা।
নয়? কদ্দিন হাতে ভালেমন্দে নাই খাই। শুনিছি সেদিন আছাডর মাও কি কহেছে। হামরা।
বোলে নিছালটিয়া হইসি। খাসিপঠা দিয়া কোকাইশ্বরি গড়ামড়ি দিলে তোক কি কিছু কহিসু?
আর আইজকা বছর মইধ্যে আনিনু একটা হাঁস তাতে তোর এত আগ? কান্দুরির মাও ভাতারের
বকনাই না শুনিয়া হাতে হাতে খরচিয়া ব্যাগটা ঝিটকাই নিয়া শনশনাইতে শৰ্শনাইতে নেম্পো
দিয়া দেখির ধরিল আরো কি আনিসে। ব্যাগটাৎ খালি অশুন পিয়াজি আলু দেখিয়া কহিল
উঠিল ‘খালি মংসর খরচ’ আর হাসেরা গোটা হাপ্তাটায় উষা খাই থাকিম। অইস তোর হাস
খাওয়ানিয়া ডাহন থামাই দেচু। এই কহি ব্যাগের অসন পিয়াজিগিলা দিলেক মাটিয়া আস্তাৎ
ঢালিয়া। এইলা দেখি সুখধন কঠিন আগি গেল। হাতের কাইচের বোতলটা মুঠি করি ধরি
কবার ধরিল –
 ‘সবুর রে মাগী সবুর। তোর গুষ্টি উদ্ধার করি দ্যাছ। কহি বোতল দিয়া আন্দাপাথালি।
মাথায় মুরে বেইঢ়িবা ধরিল। আইয়ো গে মা আইয়ো গে বাবা মারিলেক মারিলেক কহি
চিকরি উঠি হুস হারে ফেলাইল কান্দুরিয়া মাও। বঙ্কিম কান্দুরি মাক বাঁচে তানে মাক আকছান
দিয়া ধরিল। বোল্ট খুব টানাটানি করি হাতের বোতোল কাড়ি নিলে। কিন্তুক তৎক্ষণে কান্দুরির
মাও অক্ততে ভাসি গেইসে। মাওএর এইনাখান দশা দেখিয়া কান্দুরি দিশাসত্তি হারে ফেলাইল।
অক্ত দেখিয়া বোল্ট চউখচুন্দি খাই ফেলাইসে। খালি সুখধন হাসফেসেবা ধরিল। অর ডাহন
তখনও থামে নাই। কান্দুরি বঙ্কিমক কাউলিবার ধরিল ‘ভাই ভ্যানচালা ঢেরু কাকাক ডাকাই
আনেক মাক হাসপাতাল ধরি যাই। টারিবাড়ির যে কয়টা বেইচ্ছাওয়া গোটে হইসিলো সোগায়
অক্ত দেখিয়া হাতাশে ডাইল। নানান বেটিছাওয়া নানান ফুসুলাতি কাথা ফাসারফিসির করি
কহিবা ধরিল। কাহ কহেচে বাচিবা নয় কাহ কহেচে বিরেনের তার ছিড়ি গেলে পাগিলি
হেবে, কাহ কহেচে হ্যাগে মা ঘিটিমটা আউলি গেইসে নাকি হায় ? হাট তখন ভাঙি গেইসল।।
হাটুয়ার ঘর ভিতাভিতি বাড়ি চাপিসে। নিশাআতি কাউল শুনিয়া কাহয় আর আগে আসিল
নাই। সোগায় ভাবিল এই নাখান কাউল তো পতিহাটে নাগে কনেক পরে থামি যায়। বঙ্কিম।
ঢেরু কাকা ডাকে আনিল। বোল্টর আর বাড়ি যাওয়া হইল নাই। ঐ কয়ঝন মিলিয়ায় কারির
মাক ধরিবান্দি হাসপাতাল নিগিবা চাহিল।
টারিবাড়ির দুই একঝন বুদ্ধি দিল কালদিঘি হাসপাতাল নিগাও এইন্নায় মাথাফাটার
চিকিৎসা হয়। কিন্তুক নগদ কাহ যাবা চাহিল নাই। হাজার হউক মাথা ফাটা কে। পরে
সাক্ষাটাক্ষী দিবা হোবে। ঐলা কাহিজ্জাল কায় সহিবে। কান্দুরি যাবা চাহিল। কিন্তুক নিশাখের
নাসির নগদ একটা গাবুর চেংরী যাওয়া ভাল না হয় কয়া কয়ঝন বুদ্ধি দিলে কান্দুরি আইজকা
থাডক বাড়ি আগরুক কাইলকা বিহানে হাসপিতাল যাবে। গুনেশ্বরীক যখন ভ্যানৎ অঠাই
গবা ধরিল তখন নিটল হই গেইসে। কিছুদূর যাইহনে ভ্যানঅলা ঢেড়ু বুদ্ধি দিলে, ‘সুখধনদা।

ভোজির অবস্থা ভাল না হয়। অক্ত এখনও নিকিলেছে। এইন্নায় একটা হাস পিতল মাদ
ওইঠিনা ডাক্তারেরঠে থাকি খালি পট্টিটা নেওয়া যাউক। বঙ্কিম এত অক্ত জীবনে দ্যাখে নাই।।
অয় তো হাতাশে ডাইল। টস খাইসে। মাঝে মাঝে ওমা ওমা কহি ড্যাকেবা ধরিল। অর মাও
তো বেহুস হই গেইসে। খালি ভ্যানঅলা থাতিবি দিবা ধরিল 'বঙ্কিম এংনা সবুর হ বাফ।
হাসপিতাল চলিয়ায় আইচ্চি। কালদিঘি যাবার উল্টা পিখে ঢেইলদুর, যায়া ঘোর মগসলৎ
যখন যাইহনে ভ্যান থামিল তখন আতি ভালে হইসে। দেখা গেল নেকজন নাই খালি হাং
হাং করি পড়ি আছে বিল্ডিং বাড়ি। ভ্যানওলা প্যাত প্যাত করি হরেন দিবা ধরিল। কাহেরো
দেখা পাওয়া গেইল নাই। বগলতে আছিলো একটা পানের দোকান। পানের দোকানির কাচা
নিন বেলের বাজইনে ভাঙি গেইল। নিন হাতে উঠি চখু ঘসরে ঘসরে উঠি আসিয়া কান্ড দেখি
অয়ও চখু চারাই ফেলাইল। পুছ করিল তোমার বাড়ি কুণ্ঠিনা?
— হেলে পুর ।
 তে এইন্না ক্যানে আইচ্চেন?
 – ব্যান্ডেজ করিবা।
 – আরে এইটা তো পশু হাসপাতাল। এইন্না গরু ভইস, ছাগল, মুরগীর চিকিৎসা হয়।
 হায় সব্বনাশ তমরা এইন্না আসিচেন?
 সুখধনের আগ তখনও কমে নাই। বাড়িঅলিক বেইড়টিয়া যে হাসপিতাল নিগিবা হোবে
 এই ভাবিহনে মনের ভিতিরাৎ আগ আরো বেশি জ্বলি উঠিবা ধরিসল। এমনিতে নিশার
 এ্যাকশন তখনও কমে নাই। চখু নাল করি কহিল
 – “ডাক্তারক আসিবা কহ ব্যান্ডেজটা সারি দেউক।।
 – থাকিলে সেনে আসিবে। ডাক্তার থাকে টাউনৎ বিহানে ডিউটিং আইসে। ভ্যানঅলাক
 কহিল তমরা এক্ষণে হাসপিতাল ধরিযাও। ভ্যানঅলা আরও যেই আস্তা দিয়া গেইসিলো।
 সেই আস্তা দিয়া আসিবা ধরিল। ঝেল্লেৎ ঝেল্লেৎ করি অসুকিয়া মুরগীর মতন টুপিতে টুপিতে।
 মাটিয়া আস্তা দিয়া ভ্যান চলিবা ধরিল। কথাৎ কয় নেঙরার ধ্যাং খালএ অণষায়। বীরকর্ণ
 মরিবে এই মনে করিয়ায় বিধাতা অর রথের চাকা কাদোৎ পোতাইসে। দেওয়াটা ঝুনি ঠিক
 তাকতে বায্যিবার তানে সাজিয়া পড়িয়া গুড় গুড়ানি ড্যাক বাড়াই দিলে। গিড়িম গিড়িম।
 ড্যাক চাল্লাউ চান্নাউ চিলকনতে বঙ্কিমের মন মাওএর তানে আউএি আউঞি কান্দিবা ধরিল।।
 এক কথায় দুইকাথায় বরষণ আসিয়ায় পড়িল। সোগায় মিলি কোকোর সোকোর হই একটা
 পেরাইমারী ইস্কুলৎ থানিলে। আধাঘন্টা বাদে জল যখন সারিল তখন মাটিয়া আস্তাৎ আরো
 ভেরভেরিয়া কাদো হই গেইেসে। অনেক কষ্টে পাকা আস্তা উঠি ভ্যান কনেক উক্কাস পাইল।
 তাহ ডিয়া ডোখখোল পাথুরিয়া আস্তাৎ থেকেই খাইতে খাইতে প্যাটের ভুটিভাটা উল্টি।
 যাবা ধরিল। ঢেরু মনে মনে কহিবা ধরিল ইয়ার চাইতে হামার মাটিয়া আস্তায় ভাল।।

ইয়ার মইধ্যতে বোল্ট ভ্যান ঠেলিতে ঠেলিতে একটা গাছৎ যাইহনে ধাক্কাস করি উষ্টাখায়।
কহিবা ধরিল ‘কুনশালা আস্তার মধ্যৎ গছটা গাড়ি থুইসেরে গছ গাড়িলে গার তে শালার।
আস্তার মইধ্যৎ খোটোই খুড়িয়া। শালা বেহুদ্দা ঢের দেখিল বোল্ট এনাং লোড হয়ায়।
আছে। কহিল আরে 'তক কহিন ভ্যান ঠেলেক, তুই নয়ানজুলিৎ নামিহনে গাছ গিলাৎ উষ্টাখাবা।
ধরিল। ভ্যান উঠেক। হাসপাতাল চলিয়ায় আইচ্চি।
সুখধন কহিল ‘হাসপাতাল হাসপাতাল হাসপাতাল কত হাসপাতাল ঘুরালু। তোর
এখনও হাসপাতাল আইসে না। আরে হামার মাইয়া ছাওয়া বাড়িতে বেইচ্যান খায় বাড়িতে।
ঠিক হয়। এখেরে হাসপিতাল নিগিবার নাগিবে?
ভ্যানঅলা ঢেরু কহিল ভাজি সিরিয়াস।
_ বকনাই মারিন্না। এংনা চুপ করি থাকেক। গছের তল দিয়া ভ্যান চলিবার ধরিল ক্যাকের
কুকুর করি।

বিহান হই গেল। দ্যাওয়াটা ফরফর নাগেছে। কাউয়া পাখি ক্যালকেলেবার ধরিল। কান্দুরির
মন ছটফট করি আছে আতিত মাক ধরি গেলই এখনও কাহ খবর আনি দিল নাই। চিন্তা করিতে করিতে একঢোক জলও গিলিবা পারিল না। সাজিয়া পড়িয়া হাটন জুড়িবার তানে।
তমতমে নইল। হেদেলপুর থাকি দেড়মাইল হাটি আসিয়া ট্রেকার ধরিবা হয়। ঐ ট্রেকারতে
গঙ্গারামপুর যাইহনে কালদিঘি হাসপাতাল। বুক ধুকপুক করিবা ধরিল এখনও খবর ক্যানে।
আইসে না বাদে। হা খোরাকে অয় বিড়িয়ায় পড়িল। আস্তার এইপথে সাঞ্জো কাখির বাড়ি।
চ্যাচেয়া কহিল
– কান্দুরি কুনা বিড়ালু এত বিহানে?
– হাসপতাল।
– হাসপিতাল দেখিসি?
 না।
 তায় যে যাবা সাজিছি? কুন নাতেন কুন হাসপিতাল ভর্তি করিসে তুই যায়া খ্যাও
 নিকিলিবা পারিবু না। এখনও একটা ট্রেকারও আইসে নাই। কান্দুরি মনে মনে ভাবিল কাথাটা
 কএ হয়। গঙ্গারামপুরের নাম শুনা আছে দেখা হয় নাই। কাখি বুদ্ধি দিল ভ্যানঅলা ঢুরুদা।
 আসুক অরঠিনা ঠিকিনা নিয়া যাইস। এংনা ধৈয্য ধর ৬টা বাজুক কান্দুরি বাড়ির ভিতিরাৎ
 সোন্দাইল। এংনা পরে সাঞ্জো কাখি চেচে কহিল ‘কান্দুরি বাহেরা আইসেক তোর মাও
 বোধায় আইসেছে। মাও আইসেচে কথা শুনি কান্দুরির মন এংনা খুশি হইল। অয়।
 আবাড়িবার তানে মাটিয়া আস্তা ধরি একপাও দুইপাও করি আগেবা ধরিল। দেখিল
 চালাছে ঢেরুকাকা। পাছপিখে বঙ্কিম, অর বাপ আর বোল্ড কাকা। ভ্যানখান আস্তে
 আস্তে বগল নাই আসিতে কারিক দেখি বঙ্কিম উন্মুলি কান্দি উঠিল। কান্দুরি কিছু বুঝির

পাইল না। অর বাপের নিশা তখন ছুটি গেইসে। হাউমাউ করি কান্দিতে কান্দিতে কহিবা।
ধরিল ‘বেটি তোর মাও ভোরে ভোরে চলি গেল। এক নেক বুদ্ধি দিলে হাসপাতাল গেলে।
পুলিশ কেস হোবে। ঐবাদে একটা টাউনিয়া হাতুড়া ডাক্তারের বাড়ি নিগা ন। খিব চেষ্টা।
করিল। কিন্তুক হইল নাই। বগল যায়া কান্দুরি দেখিল ভ্যানখানৎ পড়ি আছে অর মার লাশ।
অক্ত দিয়া নেরা ফেরা কতুলা বেন্ডিজ। কান্দুরির বুক ফাটি যাবা ধরিল। ভাইয়ক জাবরা
বান্দি ধরি কান্দিবা ধরিল। বেটিছাওয়ালা আসিয়া সুর করিয়ার কন্দন জুড়ি দিলে। দুই একঝন।
কহিবা ধরিল কান্দুরি যদি স্টাইপেন্ডের টাকা না পাইল হয় অর মাওটা বাঁচিয়া গেল হয়।
হাইরে ভগবান এই বাহানে তুই গুনেশ্বরীক নিলু। বাড়ির উতোর পাখের থেলুবুড়া ভ্যাচেলে
ভ্যাচেলেৎ করি নেংরা ঠ্যাংখান ধরি আসিয়া কহিবা ধরিল কান্দেননা বাহে কেন্দেননা। যা
হবার তা তো হয়ায় গেইসে। ভগবানের নীলা খেলা বুঝিবার সাইধ্য কি, হামার আছে।
কহিহনে লক্ষ্মী নারায়ণের গল্ফ বিড় করিলে। কহিল এক নেংটিয়াক ধন দিবা চাহিছিলো
নারায়ণ কিন্তুক অয় এখন কানা হই গেল। ঘাটাৎ আন্দলা হই চখুমুজিও হাটিবা ধলে। টাকার
টপলাও পার হইল চখুও মেলিল। ধন কপালৎনাই। কাথায় কহে ‘কপালৎ নাই ঘি ঠকঠকেয়া।
হোবে কি? তা বাহে ইঞারও মইধ্যে একটা মাহাত্ম আছে। গরিব মানষির হাতেৎ পাইসা।
পড়িলে এইনং এ অবস্থা হয়। ভগমান অন্তর্যামী এইজন্যে এই শালালাক গরিব করি থইসে।।
কান্দুরির হাততাৎ ভগমান টাকা দিলে ক্যানে কহেক চি? ‘অর মাকে মারিবা তানে। কান্দরির।
এইলা তামান কাথা ঝনি থিয়য় কইলজাৎ হান দিবা ধরিল। চালির পইটাৎ টিকিলিস ঢিকিলিস।
করি মাথাটা আচ্ছেরেয়া কবার ধরিল। ক্যানে ভগমান তুই আমার তানে নেখিয়া থুইসি।
স্টাইপেন্ডের টাকা। এই টাকাগিলা দিয়ায় তুই মোর মা নিলু। বান্দোরের হাতেৎ মক্তার।
মালা দিয়া তুই কি খেলা দেখিবা ধরিসি ভগমান? কান্দুরির হুখহুক কান্দনৎ কিছুই শুনা গেল।
নাই। সগায় কহিবা ধরিল ধর ধর ধর। কান্দুরিক ধর। মাওয়ের শোকতে বেটির বিরেন।
শটএ হই গেল। কায় ঝনে কহি উঠিল এত কম বয়সে গুণেশ্বরী চ্যারেট হই গেলরে ?

(এই গল্পখান সাহিত্য ও সংস্কৃতিমূলক পত্রিকা।
‘মেঠোপথ’ চতুর্থবর্ষ প্রথম সংখ্যা থাকি নেওয়া।।
সম্পাদক নিমাই চন্দ্র সরকার।)

bhawaiyablog এই নেখাটা নিছে, দোতরার ডাং ||৬|| অভিজিৎ বর্মণ সংখ্যা থাকি।
প্রকাশকঃ প্রশান্ত কুমার রায়।

Post a Comment

Previous Post Next Post