সিদল তৈরিকরণ ও পরিবেশন

সিদল

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের, বিশেষ করি গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী , লালমনিরহাট ও রংপুর অঞ্চল আর ভারতের কোচবিহার, জলপাই গুড়ি গুয়াহাটি সহ অসামের অনেক স্থানত সিদল জনপ্রিয় একটা খাবার। সিদল যে এত প্রিয় তা কয়া  শ্যাষ করা যাবার নয়। ইয়াক নিয়া বিখ্যাত একটা গানও আছে" ও কিরে মজার সিদলের ভর্তা রে....সিদল শীতকালত ছলবলা ভাতের সাথে খায়া মজা বেশি। যে কোন ভর্তার সতে ইয়াক মিশাল দেয়া যায়। য্যামন; আলু, বাইগন, মানকচু ইত্যাদি। ভাতের মাড়ের ফ্যাণ দিয়াও মজার ছ্যাকা আন্দা যায়। খালি সিদল আগুনে সুন্দর করি পোড়া দিয়া কুচিকুচি পিঁয়াজ, নুন, ভোটকা কাঁচা মরুচ আর খাঁটি সরিষার ত্যাল মাখিয়া গরম ভাতের সতে খাইলে সবচায়া বেশি মজা নাগে।

শিদল
সিদল তৈরিকরণঃ যে কোন মাছের শুটকি দিয়া সিদল বানা যায়। বিশেষ করি খইলসা, পুটি, চ্যাং, চ্যাংটি মাছের শুটকা দিয়া গ্রামত বেশি সিদল তৈয়ার হয়।আরাম্ভ করার আগৎ যেইগলা নাগবেঃ
১/ শুটকা পরিমান মতন (জয়টা বানাইবেন ঐ হিস্যাবে)
২/ কালা কচুর ড্যারা পরিমাণ মতন (পেস্ট করার জন্য)
৩/অসুন পরিমান মতন (ভালো স্বাদের নাগি)
৪/কাচা মরুচ পরিমান মতন (স্বাদের নাগি)
৫/ উড়ুন- গাইন ( থ্যাতলের নাগি)
৬/ গুড়া হলদি
৭/ শস্যার ত্যাল

পোথমে শুটকা গুলাক গুড়া করি নেও। ইয়ার পরে শুটকা মিশমিশা গুড়া হইলে উয়াত সোগলা কচুর ড্যারা টুকরা টুকরা কাটি উড়ুনত ঢালি দেও। কচুর ড্যারা গুলা খানিক শুকি নিলে ভাল হয়। কারন, কচুর ড্যারার ভিতরা জল থাকে ঐ জল কিছুটা শুকালে ভাল হয়। এবার খানেক পাদ্দ দিবার পরে অসুন আর কাচা মরুচ মিশাল দেও। আচ্চা মতন পাদ্দেয়া শ্যাষ হইলে নরম পেস্ট ভাব হইবে। ত্যাল হলদি হাতত জবজবা করি সিদলের পেস্ট উরুন থাকি নিয়া গোল চ্যাপটা চাকা বানান। ইয়ার পর অইদোত শুকির দেও। ভালমতোন শুকা হইলে পরে কাগজত মোচড়ে বয়াম বা মাটির হাড়িত থোন।সিদল শুধু হামার প্রিয় খাবার নোয়ায়, এইটা হামার ঐতিহ্য।

লেখা ও ছবিঃ সুজন রায়।

5 Comments

  1. সিঁদল হামারও প্রিয় বাহে। তোমার এটি সিদল তৈরির কাহিনি জানি খুব খুশি হইলং। তোমাক কি কয়্যা যে ধন্যবাদ দিমো তা ভাবি পাবার নাকছং না। ভালো থাকেন, বেশি বেশি করি লেখেন এই আশির্বাদ করি।

    ReplyDelete
  2. আমার বাড়ি রংপুর জেলায়। আমার নানা বর্তমানে জীবিত আছেন,ওনার মুখে কোচবিহারের কথা অনেক শুনেছি। আর কোচবিহার ও রংপুরের মধ্যে তফাৎ করার মত কিছুই নেই বল্লেই চলে। ভবিষ্যতে একদিন কোচবিহারে বেড়াতে যাব। বিশেষ করে রাজবাড়ি। আপনাদের ধন্যবাদ সিদল সম্পর্কে এ লেখাটির জন্য।

    ReplyDelete
Previous Post Next Post