বিচার — জরীফ উদ্দীনের লেখা কবিতা

জয়নালের ঘুম ভাঙে গভির রাতে
জেগে বিছানায় শুয়ে বিড়বিড় করে
" না এভাবে আর বাঁচা যায় না
শালা, শালা হামার জমি হামরা উপ্যাশ থাকি
আবাদ করি খায় নিমকহারাম কালাচাঁদ
এবার হেস্তনেস্ত না করলে নয়।"
বউ জেগে উঠে রাজ্যের বিরক্তি নিয়ে
" মানুষটা নিন পারে না না পারে বাহে?
পুরা আইত ব্যাগরব্যাগর?
কি হইছে তোমার?
হামরা নিন পারব্যার নই?"
"তুই  কি বুঝবু, সউগ কিছু আনি খোয়াং মুই
বসিবসি খাইস আর এবাড়ি ওবাড়ি বেড়াস!
মুই বোঝং গো মুই বোঝং
এই কালচোখে দেখা নাগবে
হামার ভূঁইএর ধান খায় ঐ শালা কুতু
ক্যা এর বিচার না করিস আল্লাহ তুমরা?
মানষ্যক ঠকাছনু সেদিন
সেজন্যি কি আজ মোর এই দশা।"
মনে পরে জয়নাল তিন জন মিলে ব্যবসা করত
একদিন খোকাসহ তৃতীয়জনের জমি নয়
টাকা মেরে দিছিল কুলক্ষণে।
কত টাকা? মনে পরে না!
না মনে পরে না।
তবে যার টাকা মারছিল
সে জমি বিক্রি করেও দেনা শোধ করতে পারেনি
শেষে আধা কেজি চাল রেখে ঘরে
বাড়ি থেকে পালিয়ে ছিল রাতের আধারে।
ঢাকায় গিয়ে রিক্সা চালিয়ে শোধ করছে
তাদের মেরে দেওয়া টাকা।
"এইটা ঠিক করি নাই"
বুক চাপড়ায় জয়নাল
"না একটা হেস্তনেস্ত হওয়ারই দরকার
মুই না হয় লোভত পরি টেহা মারি দিছং
সেই জন্যি মোর বাপের সম্পতি খাবে ঐ....
এইট্যা কেমন বিচার আল্লাহ গো এইট্যা
কেমন বিচার?"


(বিচার- জরীফ উদ্দীন)